বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী - কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ও মৃত্যু তারিখ

জ্বি আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন এখানে আপনি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী এবং তিনি জীবনে কি কি কর্ম করেছেন কিভাবে তিনি কবি হয়ে উঠলেন তাকে কেন বিদ্রোহী কবি বলা হয় এ সম্পর্কে আসল তথ্য গুলি আমরা দেওয়ার চেষ্টা করব যদি আপনারা জানতে চান

সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আপনারা অনেক সময় অনেকে বিভিন্ন কবি এবং সাহিত্যিকদের পরিচিতি জানতে চান আজকে আমি তাদের জন্য বিশিষ্ট কবি বিদ্রোহী কবি নামে পরিচিত কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরার চেষ্টা করব আপনারা যদি জানতে আগ্রহী থাকেন তাহলে একটু ধৈর্য সহকারে আমাদের লেখাগুলো পড়ুন

কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ শে মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্তমানে বর্ধমান জেলা চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলামের অন্য নাম হল দুখুমিয়া তিনি সবার কাছে বিদ্রোহী কবি নামে পরিচিত

পিতাঃ মোঃ কাজী ফকির আহমদ' মাতা মোসাম্মদ জায়েদা খাতুন

কাজী নজরুল ইসলাম প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা গ্রহণ করেন নাই তিনি শৈশবে শিক্ষা শুরু করলে ১৯০৮ সালে মাত্র নয় বছর বয়সে কাজী নজরুল ইসলামের পিতা ইন্তেকাল করেন অভাব অনটনের কারণে তার আর উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ হয়নি তার পিতা মারা যাওয়ার পর তার চাচার অধীনে কিছুদিন লেখাপড়া ' পরে স্থানীয় মক্তবে কুরআন' ইসলাম ধর্ম' দর্শন এবং ইসলাম সম্পর্কে নানান তথ্যগুলি অধ্যায়ন করেন এ হলো তার শিক্ষা জীবন

কাজী নজরুল ইসলাম তার কর্মজীবনে লেটো গানের দলে যোগ দেন এখানে তিনি অতি তাড়াতাড়ি সুখ্যাতি অর্জন করেন; এখানে তিনি কোন অশ্লীল গান পরিবেশন করতেন না বরং তিনি বিভিন্ন পালা গান মুর্শিদী গান ইত্যাদি পরিবেশ সংগত গান তিনি পরিবেশন করতেন তিনার অসাধারণ প্রতিভার কারনে লেটোতে প্রধান নির্বাচিত হন প্লেটো দলে থাকা অবস্থায় তিনি বিভিন্ন বই কিতাবাদী পড়ে সাহিত্যের চর্চা করতেন এবং তিনি এই সাহিত্যের চর্চা করার মাধ্যমে কয়েকটি কবিতা ছড়া এবং পালা

 গান রচনা করেন এরপর তিনি শিক্ষার জন্য গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তির সহযোগিতায় শেয়ার সোল রাজ স্কুলে ভর্তি হন তিনি শৈশব থেকে একটু চঞ্চল ছিলেন যার কারণে স্কুলের নিয়ম কানুন তার কাছে ভালো লাগতো না এজন্য তিনি স্কুল ছেড়ে দেন স্কুল ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি চিন্তা করেন এখন তিনি কি খাবেন কি করবেন কারণ তার আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না এরপর তিনি আসানসলের একটি রুটির

 দোকানে মাত্র পাঁচ টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন মজার বিষয় হলো তিনি রুটি তৈরির ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন কবিতা বিভিন্ন গান গজল এগুলি লিখতেন এবং তিনি এই রুটি তৈরি করতে করতে বিভিন্ন বই পড়েন যার মাধ্যমে তিনি অঢেল জ্ঞানের সমাহার হন তার এই মহান প্রতিভা দেখে তৎকালীন এক পুলিশ ইন্সপেক্টর তাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন এবং ময়মনসিংহ জেলার দরিরামপুর হাই স্কুলে ভর্তি করান

১৯১৯ সালে যখন বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় তখন তিনি নবম শ্রেণীর ছাত্র এই যুদ্ধের কারণে তিনি আর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে লেখাপড়া করতে পারেননি এরপর তিনি যুদ্ধ করার জন্য সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ৪৯ নম্বর বাঙালি পল্টন রেজিমেন্টের হাবিলদার পদে উন্নত হন এবং এর সৈনিক জীবনে তিনি চলে যান পাকিস্তানের করাচিতে

১৯১৯ সালের এপ্রিল মাসে যখন রেজিমেন্ট ভেঙ্গে যায় তখন তিনি তার সমস্ত দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে আসেন নিজ মাতৃভূমি চুরুলিয়া গ্রামে চলে আসেন এরপর তিনি অন্য কোন দিকে না তাকিয়ে একনিষ্ঠভাবে কাব্য রচনা শুরু করেন তার এই কাব্য রচনা গুলো বসুমতি' মুসলিম ভারত' মাসিক প্রবাসী' বিজলী' এবং তারই প্রকাশিত ধুমকেতু পত্রিকায় ছাপা হতো' কবি কাজী নজরুল ইসলামের তৎকালীন

 কবিতা এবং কাব্য রচনা গুলির রাজনীতিতে একটি বড় মোর দেখা যায় তার কোভিদ মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের নিপীড়িত নির্যাতিত বঞ্চিত মানুষদের জাগরণে তিনি ছিলেন মহান নায়ক 

বল উন্নত মম শির

শির নেহারি আমারই

নত-শির ঐশিখর হিমাদ্রির

বলবীর-

বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাঁড়ি

চন্দ্র-সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি

ভূলোক দুলোক গোলক ভেদিয়া

খোদার আসন আরশ সেদিয়া

উঠিয়াছি চির বিস্ময় আমি বিশ্ব বিধাত্রীর

মম ললাটে রুদ্র-ভাগ্যবান জলের আজ রাজটিকা দীপ্ত জয় শ্রীর

কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিদ্রোহী কবিতার মাধ্যমে তিনি বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত হন কারণ বিদ্রোহী কবিতার মধ্যে রয়েছে কাজী নজরুল ইসলামের আত্মজাগরণ ব্যক্তিত্ব আত্মপ্রত্যয় এখানে তিনি বহুমাত্রিক রূপে প্রকাশ করেছেন নিজেকে এই কবিতায় তিনি ধ্বংসকারী আবার তিনি স্রষ্টা তিনি বিপ্লবী

 তিনি দেশপ্রেমিক ১৯২১ সালে এবং ১৯২২ সালে বিদ্রোহী কবিতা বিজলি পত্রিকায় যখন ছাপা হয় তখন এই পরিমাণ কবিতাটির চাহিদা বেড়ে যায় দ্বিতীয়বার আবার ছাপাতে হয় এই বিদ্রোহী কবিতা লেখার পর কবি রবীন্দ্রনাথের প্রক্রিয়া এমন হয়েছিল যে তিনি কাজী নজরুল ইসলামকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন

২৯ আগস্ট ১৯৭৬ সালে মাত্র ৭৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে কবরস্থ করা হয়

সম্মানিত পাঠক প্রিন্টার এতক্ষণ আপনারা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংক্ষিপ্ত জীবনী এবং তার জীবনের বিভিন্ন তথ্য আপনারা জানতে পারলেন যদি আপনার এখান থেকে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই ওয়েবসাইটটির কথা আপনাদের বন্ধু বান্ধবের কাছে কবে লিংকের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিন ধন্যবাদ