রুকিয়া কি কেন রুকিয়া করা হয় বিস্তারিত দেখুন ( ১ পার্ট)
প্রিয় পাঠক নিশ্চয়ই আজকে আপনি রুকিয়া কি কেন রুকিয়া করা হয় এ বিষয়ে জানতে এসেছেন যদি আপনি রুকিয়া কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকে আমাদের এই পোস্টটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ
পাঠক আমরা নানান সময় নানান রোগ নিয়ে ভোগে থাকে কিন্তু আসলে আমরা বুঝতেও পারি না যে কি রোগের মধ্যে আমরা আছি আজকে আমাদের এই আলোচ্য বিষয় হবে যে রুকিয়া কি এ বিষয়টা আমরা সম্পন্ন পরিষ্কার করব চলুন দেরি না করে আমরা জেনে ফেলি
সূচিপত্রঃ রুকিয়া কি কেন রুকিয়া করা হয় বিস্তারিত দেখুন ( ১ পার্ট)
- রুকিয়া কি
- তিন ধাপের রুকিয়া করতে পারবেন
- সুন্নাত মোতাবেক যত রুকিয়া
- রুকিয়া সাপ্লিমেন্টারি
- রুকিয়া সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর
- রুকিয়ার গোসল কিভাবে করবেন
- রুকিয়া কেন প্রয়োজন
- কেন অন্য মানুষকে রুকিয়া করবেন
- একজন ভাল রাখির বৈশিষ্ট্য
- রুকিয়া প্রস্তুতি যেভাবে করবেন
- রুকিয়া করার পর যেভাবে নিজেকে সামলাবেন
- আমাদের শেষ কথা
রুকিয়া কি
রুকিয়া কি এ সম্পর্কে আপনি নিশ্চয়ই জানতে চাইবেন চলুন আমরা এর বিস্তারিত বিশ্লেষণ আপনাদের মাঝে করে ফেলি রুকিয়া এর আভিধানিক অর্থ হলো মন্ত্র, ঝাড়ফুক , সম্মোহন , জাদু , তাবিজ , কবজ ইত্যাদি অর্থে রুকিয়া শব্দটি ব্যবহার করা হয় সাধারণত আমরা যেটা বুঝি রুকিয়া অর্থ হল ঝাড়ফুঁক করা মন্ত্র বুঝতেও আরবীতে রুকিয়া শব্দটি ব্যবহার করা হয় মন্ত্র মানে বিশেষ কিছু অর্জনের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট কিছু শব্দ বাক্য উচ্চারণ করা যেমন এমন কিছু আবৃত্তি করে ফু দেওয়া যার ফলে বিশেষ প্রতিক্রিয়া দেখা যায় এর মধ্যে সরিয়ে ঝাড়ফুক যেমন অন্তর্ভুক্ত তেমনি কুফরি যাদুবিদ্যার মন্ত্র পাঠ অন্তর্ভুক্ত শরীয়তের ভাষায় রুকিয়া শব্দটি একটু ভিন্নমাত্রায় ব্যবহার করা হয় কোন ব্যক্তি যখন কোরআনের আয়াত অথবা দুয়া আল্লাহ তায়ালার কোন নাম বা সিফাতকে উদ্দেশ্যে যেমন নিজের বা অন্যের সুস্থতার জন্য কিংবা অন্য কোন লক্ষ্যে অর্জনের জন্য একমাত্র আল্লাহর সাহায্য চেয়ে থাকবে পরিভাষায় সেটাকে আমরা রুকিয়া বলে থাকি বা রুকিয়া বলা হয়
আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে কেন এই রুকিয়া করা হয় মানুষের শারীরিক মানসিক এবং আত্মিক রোগের জন্য এই চিকিৎসা করা হয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে সেই রোগের চিকিৎসা থাকুক কিংবা না থাকুক সর্ব অবস্থায় যেকোনো রোগের জন্য রুকিয়া করা হয় রুকিয়া আসলে মনের আশা পূর্ণ করার জন্য কোন জাদু মন্ত্র নয় নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হওয়ার জন্য কিংবা দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য এটা কোন তদবির নয় রুকিয়া পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা বা ব্যবসার মধ্যে উন্নতি করা লক্ষ্যে নয় বরং এটা একটা চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা করা হয়
তিন ধাপের রুকিয়া করতে পারবেন
প্রিয় পাঠক রুকিয়া এর কয়েকটি স্তর রয়েছে এক নাম্বার হল সর্বোত্তম রুকিয়া , দ্বিতীয় নাম্বার উত্তম রুকিয়া , তৃতীয় নাম্বার বৈধ রুকিয়া/
আমরা এগুলো নিয়ে বিস্তারিত এখন আপনাদের সামনে আলোচনা করব তবে এর আগে জেনে রাখা ভালো যে আপনাকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিটা ক্যাটাগরি থেকে পড়তে হবে এমনটা জরুরী নয় আপনি চাইলে উল্লেখিত সর্বপ্রকারের আয়াত এবং দয়া থেকে পড়তে পারেন অথবা চাইলে যে কোন এক প্রকারের রোকিয়া থেকে পড়তে পারেন তবে বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে শুধু মাসনুন রোকিয়া গুলো বারবার পড়লে দীর্ঘক্ষণ রোকিয়া করলে তুলনামূলক বেশি উপকার পাওয়া যায় আর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও কম হয় আরেকটি কথা সাধারন রুকিয়ার আয়াত বলতে যে আয়াতগুলো আমরা বুঝি সেটা নিচে উল্লেখিত প্রথম দুভাগের রুকিয়া দিয়ে সাজানো হয়েছে
সর্বোত্তম রুকিয়া------রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিব্রাইল আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম অথবা সাহেবের কিরাম রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু যেসব দোয়া এবং আয়াত দ্বারা রুকিয়া করেছেন যেমনঃ সূরা ফালাক , সূরা নাস , সূরা ফাতিহা/
যে সমস্ত আয়াত এবং দোয়া শয়তান থেকে নিরাপদ চাইতে বিপদ থেকে বাঁচতে কিংবা সুস্থতার জন্য রাসূল পড়েছেন অথবা কাউকে পড়তে বলেছেন যেমন সূরা বাকারার আয়াতুল কুরসি , সকাল সন্ধ্যায় মাসনুন দোয়া সমূহ
উত্তম রুকিয়া-----পবিত্র কুরআনে যে সকল আয়াত আক্রান্ত ব্যক্তির সমস্যার সমাধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যশীল মাসনুল রোকিয়ার পর তুলনামূলকভাবে এ সকল আয়াত অন্যান্য আয়াতের চেয়ে অধিক উপকারী যেমন যে আয়াতের জাদুর কথা আছে সেটা জাদুগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য যে আয়াতে জ্বীন বা শয়তানের কথা আছে সেটা জিনের রোগীর জন্য অধিক উপকারী যেমন জাদুগ্রস্থ ব্যক্তির জন্য সূরা আরাফ এর ১১৭-১২২/আয়াত সূরা ইউনুস --৮১-৮২/আয়াত সূরা তোহা--৬৯/আয়াত অথবা জিনে ধরা ব্যক্তির জন্য সূরা বাকারা--১০২ , সূরা সফফাত--১-১০ এবং সূরা জ্বীন-১--৯ আয়াত পর্যন্ত
বদ নজরে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য---সূরা ইউসুফ---৬৭/সূরা কাহাফ--২৯ /এবং সুরা কলাম এর শেষ দুই আয়াত
বৈধ রুকিয়া-------- এছাড়া আপনি কুরআন উল কারিমের যে অন্য যে কোন আয়াত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ বর্ণিত যেকোনো দোয়া নিয়ে রুকিয়া করতে পারেন এর পাশাপাশি নিজে থেকে চাইলে কোন দোয়াও বলতে পারেন যেমন প্রসিদ্ধ কিছু দোয়া আছে
সুন্নাত মোতাবেক যত রুকিয়া
প্রিয় পাঠক রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সঙ্গীরা আমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ এবং পরলৌকিক মুক্তি এবং সফলতার জন্য তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করা প্রতিটি মুমিনের জন্য অপরিহার্য তাই এবার আমরা রাসূলের সাহাবায়ে কেরামের রোকিয়ার কিছু পদ্ধতি দেখবো তবে আর সতর্কতা স্বরূপ একটা বিষয় প্রথমেই বলে দেওয়া উচিত এখানে রুকিয়ার যেসব পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা হবে এর মধ্যে যেগুলোতে রোগীকে স্পর্শ করার কথা এসেছে সেগুলো সাধারণভাবে গাইরে মাহরাম ওপর রুকিয়া করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় এক্ষেত্রে আপনাকে শুধুমাত্র কুরআন থেকে আয়াত তেলাওয়াত করে ফু দিতে হবে এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন যেমন ধরুন
- আল্লাহর নাম অথবা দোয়া কুরআনের তেলাওয়াত করা
- রোগীর মাথায় অথবা আক্রান্ত অঙ্গে হাত রেখে তেলাওয়াত করা
- তেলাওয়াত করার পর ফু দেওয়া
- তেলাওয়াত করার পর থুতু দেওয়া অথবা হাতে থুতু নিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগানো
- একাধিক পদ্ধতির মধ্যে সমন্বয় করা
- পড়ার পরে হাতে ফু দিয়ে আক্রান্ত স্থানে বা পুরো শরীরে হাত বুলিয়ে দেওয়া
- ফু দেওয়া ছাড়াই আক্রান্ত স্থানে হাত বুলানো
- ওষুধ পানি লবণ অথবা এরকম কিছুতে রুকিয়া করে সেটা ব্যবহার করা
- বাটি বা এরকম কিছু হাত দিয়ে দোয়া করা এরপর সেটা আক্রান্ত স্থানে লাগানো
- পরপর কয়েক দিন রুকিয়া করা
রুকিয়া সাপ্লিমেন্টারি
প্রিয় পাঠক এখন আমরা কিছু ঔষধ এবং ঔষধি গুনসম্পন্ন লতাপাতা ইত্যাদির সাথে পরিচিত হব যার রুকিয়ার সঙ্গে ব্যবহার করা হয় তবে খেয়াল করার বিষয় হচ্ছে এগুলো রুকিয়া না বরং রোকিয়ার সম্পূরক বা কার্যকারিতা বর্ধক বস্তু হচ্ছে যেসব কাজ যা আমরা একটু আগে বর্ণনা করলাম আরেকটি বিষয় হচ্ছে রুকিয়ার সাথে এসব ব্যবহার করতেই হবে এটা আবশ্যক না যদি এগুলো সহজলভ্য হয় এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে আপনার যথেষ্ট ধারণা থাকে তখন চাইলে ঢুকি আর সাপ্লিমেন্ট হিসেবে এগুলো ব্যবহার করতে পারবেন
- রুকিয়ার পানি
- হিজামা বা কাপিং থেরাপি
- মধু
- কালোজিরা
- অলিভ অয়েল
- খেজুর
- বড়ই পাতা অথবা কর্পূর পাতা
- সোনা পাতা
- ভারতীয় সামুদ্রিক কস্টাস
- সদকা করা
- রাতের সালাত আদায় করা অর্থাৎ তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা
রুকিয়া সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর
প্রিয় পাঠক রুকিয়া বলতে আমরা বুঝি যে অনেক কিছুই তবে রুকিয়া সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর রয়েছে ধরুন অডিও যে সমস্ত রুকিয়া পাওয়া যায় সেগুলো কি শোনা যাবে কিনা এ সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন থাকে চলুন সেটাই আমি আপনাদেরকে বলি রুকিয়ার অডিও বা অডিও রুকিয়া বলতে যেসব রেকর্ডিং কে বোঝানো হয় যাতে সাধারণভাবে রুকিয়ার আয়াত এবং দোয়া ব্যবহৃত থাকে তবে ব্যাপারটা এমন যে আমরা মুসলমানরাই শুধু রোকেয়ার অডিও শুনি তা কিন্তু নয় বরং অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও অডিও ব্যবহার করে এক্ষেত্রে অনেকে youtube থেকে রুকিয়া শুনে ইউটিউবের মধ্যে নানা ধরনের রুকিয়া আছে মুসলমানদের রোকিয়া যেমন আছে শিয়া ধর্মলম্বীদের রুকিয়াও পাওয়া যায় কারণ তাদের রুকিয়া হল শিরকি রুকিয়া যদি আপনি সেটাকে শুনেন তাহলে আপনার ঈমান থাকবে না যেহেতু আমরা সাধারণ মানুষ আমরা বুঝিনা এজন্য আমরা আপনাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করছি আসলে কোন ধরনের রুকিয়া শুনবেন
রুকিয়া এর জন্য অডিও শোনা কি যথেষ্ট হবে না অডিও সোনা যথেষ্ট হবে না এটা শুধুমাত্র একটা সাপ্লিমেন্ট এটাই সব কিছু নয় বরং পাগলের মত শুধু অডিও শুনতে থাকলে ফায়দা কম এবং কষ্ট অনেক বেশি হয় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কেউ যদি নিজে তেলাওয়াত করতে পারে তাহলে অডিও না শুনে নিজে পড়াটাই উত্তম তেলাওয়াত করলে সোনার চেয়ে অনেক বেশি উপকার
ক্ষেত্রবিশেষে অডিওর বিকল্প নেই যেমন মেয়েদের পিরিয়ডের সময় তখন তারা নিজে তেলাওয়াত করতে পারবে না অন্য মানুষ যে তেলাওয়াত করে শুনাবে এটা দাও মুশকিল তাই বাধ্য হয়ে এমন খেতে সেরা অপশন হচ্ছে রুকিয়ার অডিও সোনা
রুকিয়ার গোসল কিভাবে করবেন
প্রিয় পাঠক রুকিয়ার গোসল খুবই উপকারী এবং জরুরী অনুষঙ্গ রোকেয়া শেষ করে রুকিয়ার গোসল করলে অনেকটা স্বস্তি পাওয়া যায় এছাড়া জ্বীনের রোগীর ক্ষেত্রে প্রতিদিন রকিয়ার পর গোসল করিয়ে দিলে জিনের ওপর বেশ ধকল যায় আর রোগী তাৎক্ষণিকভাবে ঠান্ডা হয়ে যায় আর জাদু এবং বদ নজরের চিকিৎসাতে তো রুকি আর গোসল খুবই গুরুত্বপূর্ণ
রুকিয়া কেন প্রয়োজন
প্রিয় পাঠক নিশ্চয় আপনি জানতে চাবেন যে রোকেয়ার প্রয়োজন কি আসলে রোকিয়ার প্রয়োজন আছে এই রুকিয়া নিয়ে আলোচনা করা খুবই দরকার এর পেছনে এত সময় পরিশ্রম আর মেধা ব্যয় করার লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কি আর এতে লাভটাই বাকি আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহর কালিমাকে প্রতিষ্ঠিত করা সমাজ থেকে কুফুরি জাদু ফিতনা নির্মূল করা কবিরাজ নামের শয়তান জাদুকরদের থেকে মানুষকে দূরে রাখা প্রায় ভুলে মানুষ নিমজ্জিত হচ্ছে বিভিন্ন কুফুরি কাজ করছে যাতে করে ইসলামের ক্ষতি হচ্ছে ঈমানের ক্ষতি হচ্ছে আপনাদেরকে এই জন্য রুকিয়ার কথা স্মরণ করে দিচ্ছি
কেন অন্য মানুষকে রুকিয়া করবেন
প্রিয় পাঠক অনেকে আছে প্রশ্ন করতে পারে কত শত দরকারী বিষয় আছে এই সমস্ত দরকার বিষয় ছাড়া কেন এই রোকিয়ার নিয়ে আলোচনা করছেন কেউ বলেন এসব কাজ ছোটখাটো মোল্লাদের হাতে ছেড়ে দেন তাদের জন্য সহজ কথা আমরা খুব ভালোভাবে জানি জাদু বদন জিন ইত্যাদি সমস্যার মধ্যে মানুষ নাই এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল সমস্যাগুলো মানুষের মাঝে যতটাই ব্যাপক এর সমাধানের ব্যাপারে মানুষ ততটাই অজ্ঞ এ সকল সমস্যায় মানুষ যে পরিমাণে আক্রান্ত বিষয়টা তার চেয়ে বহু গুণ বেশি অবহেলিত আর সমাধানের সাথে তো আমাদের দেশের প্রায় মানুষ পরিচিত নয় বরং বাস্তবতা হলো অধিকাংশ মানুষের ভ্রান্ত বিশ্বাস হচ্ছে কুফুরি জাদু কাটতে রুকিয়া কোন ভূমিকা রাখে না বরং কুফরি দিয়েই সেটাকে নষ্ট করতে হয় আমাদের চারপাশে অসংখ্য মানুষ এসব সমস্যায় আক্রান্ত আমরা কেউ নিজেই ভিকটিম কারো পরিবারের লোক আর কারো আত্মীয়-স্বজন কবিরাজ এর কাছে
ঘুরে ঘুরে বহু পরিশ্রম করে প্রচুর টাকা নষ্ট করে ফেলে এর পেছনে মেধা শ্রম এবং সমস্যা ব্যয় করে অবশেষে কেউবা সুস্থ জীবনের আশা ছেড়ে দেয় কেউ বা আবার অসুস্থ হয়ে থাকে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে জীবনকে চির বিষন্নতার চাদরে ঢেকে দেয় আর কবিরাজের কাজগুলো কুফরি শির্কি হওয়ার কারণে নষ্ট হয় মানুষের আখেরাতের জীবন আবার আপনার চারপাশে এমন মানুষের অভাব নেই আমাদের দেশে হয়তো এমন একটা প্রাপ্তবয়স্ক লোকও পাওয়া যাবে না যার নিজের পরিবার অথবা আত্মীয়স্বজনের মাঝে কেউই এই জাতীয় সমস্যায় ভুগছেনা এদের দুনিয়া এবং আখেরাতের ধ্বংস থেকে বাঁচানোর জন্য রুকিয়ার অত্যন্ত জরুরী আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন
একজন ভাল রাকির বৈশিষ্ট্য
প্রিয় পাঠক যে ব্যাক্তি রুকিয়া করে তাকে বলা হয় রাকি এখন আমরা এই ব্যক্তিকে চিনব কিভাবে যে এই ব্যক্তি আসলেই কি একজন রাকি সেটা আমাদেরকে চিনতে হবে জানতে হবে কিছু ভুল রয়েছে যেগুলো যদি তার মধ্যে পাওয়া যায় তাহলে আমাদের বুঝতে হবে এই ব্যক্তি আসলে একজন রাকি চলুন সেগুলো আমরা জেনে আসি------
- শিরিক এবং বিদআত মুক্ত ইসলামী আকীদার অনুসারী হওয়া এবং মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস থাকা
- আল্লাহর কালাম যে রোগ ব্যাধি কোন জ্বর জাদু জিনের ওপর প্রভাব ফেলতে সক্ষম এ ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা সুস্থতা কেবল আল্লাহর হাতে আমার কোন সাধ্য নেই মানুষকে সুস্থ করার এটা খুব ভালোভাবে অন্তরে গেঁথে নেওয়াকোন রোগী সুস্থতা লাভ করার খবর পেলে আত্ম গর্ভে আক্রান্ত না হওয়া বরং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো
- প্রতিদিনের মৌলিক আহকাম যথা নামাজ রোজা ইত্যাদি বিষয়ে যত্ন নেওয়া
- মানসিকভাবে দৃঢ় এবং সাহসী হওয়া অধিক পরিমাণে নফল রোজা তাহাজ্জুদ ইত্যাদির মাধ্যমে আত্মার দিক দিয়ে সুদৃঢ় হওয়া
- জিন জাতির অবস্থা প্রকারভেদ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তাদের আচার-আচরণ জিনেরা কিভাবে মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এরপর তারা কিভাবে বিদায় হয় ইত্যাদি বিষয়ে জানান জিনদের মধ্যে ঝামেলা মিথ্যা বলার প্রবণতা খুবই বেশি এজন্য জিনদের স্বভাব ধোঁকাবাজি কোটো কৌশলের ব্যাপারে সজাগ এবং সতর্ক হওয়া
- জাদু জিন বদনজর ওয়াসওয়াসা এসব সম্পর্কে জ্ঞান রাখা
- পবিত্র কুরআনের তেলাওয়াত সহি শুদ্ধভাবে জানা
- পরিবারের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া
- নিজের বাড়ি থেকে সব রকমের ভাস্কর্য মূর্তি ছবি দেখার যন্ত্র এগুলি সরিয়ে ফেলা
- যিনি রুকিয়া করবেন তাকে বিবাহিত হওয়া উত্তম
- রোগীর শারীরিক সুস্থতার দিকে খেয়াল রাখা
- জিন বা জাদু সংক্রান্ত সমস্যা মেয়েদের বেশি হয় সুতরাং এ ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করতে বলা
- যে ব্যক্তি রুকিয়া করবেন তাকে অবশ্যই আন্তরিক হতে হবে
রুকিয়া প্রস্তুতি যেভাবে করবেন
প্রিয় পাঠক আপনি যেখানে রুকিয়া করবেন শুরুতেই সেখানকার পরিবেশ রুকিয়ার উপযোগী করে নেওয়া উচিত রুকিয়ার সাথে কোন সাপ্লিমেন্ট এর প্রয়োজন হলে তার ব্যবস্থা আগে থেকেই নিতে হবে যেন মনোযোগে বিঘ্ন না ঘটে রোখিয়ার প্রভাব অধিকাংশই তেলাওয়াতের একাগ্রতার উপর নির্ভর করে আর নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল করবেন
- চিকিৎসা শুরুর পূর্বে ঘরে টাঙ্গানো বা সাজিয়ে রাখা কোন ছবি ছোট বড় ভাস্কর্য বা মূর্তি মানুষ বা প্রাণীর পুতুল থাকলে সরিয়ে ফেলতে হবে যেন রহমতের ফেরেস্তা ঢুকতে পারে
- যেখানে উপস্থিতি কেউ নেই যেন অনেক ইসলামের বিরোধী কোন কাজ না থাকে সেটা মনে রাখতে হবে যেমন ধরুন কোন পুরুষ রেশম সিল্ক বা স্বর্ণ পড়ে আছে অথবা কোন মহিলা বেপর্দা হয়ে আছে আর কোন বাদ্যযন্ত্র বা কুকুরের ঘরে থাকা যাবে না
- রোগীর সাথে কোন তাবিজ থাকলে খুলে নষ্ট করে ফেলতে হবে তাবিজ আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল এর প্রতিবন্ধক অনেক সময়ের সাথে কুফরী তাবিজ থাকলে রুকিয়া করলে কাজ হয় না সমস্যা বেড়ে যায়
- রোগী মহিলা হলে তাকে সম্পূর্ণ পদাবৃত অবস্থায় থাকতে হবে এক্ষেত্রে রোগীর বাহারামপুরুষ রুকিয়া করতে পারবে যদি না পারে তাহলে চিকিৎসক যেভাবে দরকার সেভাবে করবেন
- সমস্যার বিবরণ অনুযায়ী বদন এবং জাদুতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ গুলোর ব্যাপারে প্রশ্ন করে নিশ্চিত হতে হবে
- জিন দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর রুকিয়া করার সময় রোগীর ঠিক সামনে এবং একদম কাছে বসা যাবেনা তাহলে খারাপ জিন তাকে আঘাত করার সুযোগ পেয়ে যাবে হাতের কাছে এমন কিছু রাখা যাবে না যার দ্বারা নিজেকে নিজে আঘাত করতে পারে জাদু আক্রান্ত করাও রোকিয়া করার সময় আশেপাশে একটা পাত্র ছোট বালতি অথবা এরকম কিছু রাখা উচিত
- চিকিৎসা করার পূর্বে রোগী এবং রাকি উভয়ে অজু করে নিবেন আরেকটি বিষয় আবশ্যক দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বেশি থাকে এ ধরনের কোন সময় রুকিয়া করা
- সবশেষে রাকি রোগী এবং উপস্থিত সবাই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবেন ইস্তেগফার পড়বেন দরুদ শরীফ পড়বেন
রুকিয়া করার পর যেভাবে নিজেকে সামলাবেন
প্রিয় পাঠক প্রত্যেকটা জিনিসের একটা দিক নির্দেশনা রয়েছে রুকিয়া যে ব্যক্তি করবে তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে এজন্য তাকে সেদিক থেকে নিজেকে সামলিয়ে রাখতে হবে কিভাবে সামলাবেন সে বিষয়টা এখন আমি আপনাদের সামনে বলবো চলুন বিষয়টা আমরা জেনে আসি----
- সময় দেওয়া আপনি যদি রাকি হন তবে রুকিয়া করার পর রোগীকে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে দিন অবস্থা বিবেচনায় এটা ১০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত হতে পারে
- রোকিয়ার পর অজু করতে বা হাত মুখ ধুয়ে আসতে বলুন এতে অনেক হালকা বোধ মনে হবে
- আরেকটি কাজ করা যেতে পারে তৎক্ষণিক সুস্থতা নিয়তে সূরা ফাতিহা এবং আয়াতে শেফা তিনবার পড়বেন
- রুখিয়ার গোসল করা এটা খুব উপকারী বলা যায় এক্ষেত্রে সেরা প্রধান সমাধান
আমাদের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আপনারা রুকিয়া কি কেন রুকিয়া করা হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলেন যদি আপনারা ২ পার্ট টি দেখতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করে দিবেন এবং কমেন্ট সেকশনে জানিয়ে দিবেন যে আমরা ২ পার্ট টি দেখতে চাই সম্মানিত দর্শক শ্রোতা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url